শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন
লাবণ্য যখন শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আসে, তখন তার মা খুব আগ্রহ করে জানতে চায় যে, “ঐ বাড়িতে তার কেমন লাগে।”
লাবণ্য বলে ওখানে আমার ভালো লাগে না মা।সব মানুষ গুলো কেমন যেন। পরিবেশটাও আমার ভালো লাগতেছে না।লাবণ্যের ভিতরে এক ধরনের হতাশা দেখতে পায় তার মা।
দেখতে দেখতে বেশ কিছু দিন চলে গেল।লাবণ্য চলে যাবার সময় চলে এসেছে। আজকে তার মা তাকে রান্না ঘরে ডেকে নিয়ে চুলায় ফুটন্ত পানিতে তিনটি পাত্রে একটিতে আলু,আরেকটিতে ডিম আরকটিতে চা দিলেন। বিশ মিনিট যাবার পরে চুলার আগুন নিভিয়ে দিয়ে লাবণ্যকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি দেখতে পেলে”?
লাবণ্য বিস্ময় ভরা চোখে বললো কিছু রান্না করতে দেখলাম!
_ “কিছুই কি লক্ষ্য করো নি?”
_ ” ভিন্ন কি দেখবো রান্নাই তো করেছো মা”
আলু মোটামুটি শক্ত, ডিম খুব হালকা, চা খুবই শক্ত। কিন্তু এগুলোকে ফুটন্ত পানিতে দেবার পরে আলু নরম হয়ে গেল, ডিম শক্ত হয়ে গেল, আর চা সুন্দর ঘ্রাণ আর মিষ্টি স্বাদে পানিতে মিশে গেল। এখন আমি তোমাকে যে কথা গুলো বলবো, আমার মাও আমাকে এ কথা গুলো বলেছিলো জানিনা তুমি কেমন রিয়্যাক্ট করবে।কিন্তু আমার জীবনে কথা গুলো অনেক প্রভাবিত হয়েছিল।
তুমি যদি শ্বশুর বাড়িতে নিজেকে কঠিন ভাবে উপস্থাপন করো,তবে প্রতিকূল পরিবেশের সাথে তোমার সংঘর্ষ হবে। তোমাকে দূর্বল করবে ঠিক আলুর মত নরম করে ফেলবে, তোমার ব্যক্তিত্ব খারাপ হয়ে যাবে।
নিজেকে যদি তুমি নরম ভঙ্গুর করে উপস্থাপন কর,তবে প্রতিকূল পরিবেশ তোমায় কব্জা করে ফেলবে।আঘাতের পর আঘাত এসে তোমার রিদয়কে এক সময় কঠিন করে ফেলবে ঠিক ডিমের মত।
কিন্তু তুমি যদি তোমার ভালোবাসা দিয়ে নিজেকে প্রতিকূল পরিবেশের সাথে মিশিয়ে তার অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারো তবে, পরিবেশ সুন্দর হয়ে উঠবে ঠিক যেমন চায়ের ঘ্রাণ নিজেকে মিশিয়ে দিয়ে পানিকে সুস্বাদু আর চারপাশে মিষ্টি ঘ্রাণে ভরিয়ে দিয়েছে।
পরের দিন যখন লাবণ্য তার শ্বশুর বাড়িতে যাবে, তখন তার ভিতরে এক আশ্চর্য শান্ত ভাবে আর এক দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ পাচ্ছিল!